আমি আমেরিকায় আসি ১৯৫৮ সালে। পেনসিলভানিয়া রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার শেষ পর্ব সারতে। সেখান থেকে সরাসরি চাকরি নিয়ে ক্লীভল্যান্ডে এসে পৌঁছাই ১৯৬২ তে।
ক্লীভল্যান্ডে সে সময়ে বাঙালীর তো কথাই নেই, ভারতীয়দেরই সংখ্যা ছিল একান্ত নগণ্য। অনেক আগে অবশ্য কিছু বাঙালী মুসলমান এসে বসবাস শুরু করেছিলেন এখানে, তাঁদের সন্তান সন্ততিরা নানা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, কেউ কেউ সঙ্গীত ইত্যাদিতেও নাম করেছেন। কিন্তু আমি যখন আসি, বাঙালি বলতে তখন শুধু ছিলেন সপরিবারে বাণীপ্রসাদ বন্দোপাধ্যায় আর রণেন বন্দোপাধ্যায়
আমার আমেরিকা প্রবাস ক্লীভল্যান্ডেই শুরু, ১৯৬৫ তে আমি সরাসরি দেশ থেকে Cleveland Clinic এ Dr. Robert Smeby এর কাছে Post Doctorate করতে আসি. ভদ্রলোক নিজেই আমায় তুলে নিয়ে এসে যে হোটেলটিতে উঠিয়েছিলেন, তার অবস্থান ক্লিনিকের ঠিক পাশে। এক হোটেলের ঘরে, প্রথম দিন রাত্রে সে ঘরের জানলা দিয়ে নীচে কার্নেগি সড়কে দেখি দুটি কৃষ্ণাঙ্গ মারামারি করছে, বোতল ছোঁড়াছুড়ি করছে একে অন্যকে তাকে করে.
ক্লীভল্যান্ডে আমরা প্রথম দুর্গোৎসবের অনুষ্ঠান করি ১৯৭৮এ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্য আগেই নিউ ইয়র্ক , বস্টনে পুজো হয়েছে। কিন্তু ক্লীভল্যান্ডের প্রথম পুজোয় কিছু অভিনবত্ব ছিল , যার উল্লেখে এ শহরে প্রবাসী বর্তমান বাঙালি সম্প্রদায়ও খুশি হবেন বলে আমার ধারণা। কিন্তু সে কথায় যাবার আগে একটু পিছনে ফিরে যাওয়া দরকার।
আমি আমেরিকায় আসি ১৯৬৭ সালে , আর ক্লীভল্যান্ডে বসবাস শুরু করি ১৯৭৬এর অগাস্ট এ। বোস্টনের Tagore Society of New England থেকে প্রবাসী নাম যে বাঙালী সংঘটির সৃষ্টি হয় , যেটি আজও কর্মতৎপর , তার প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ছিলাম আমি। প্রবাসীকে কেন্দ্র করে দুর্গাপূজা হত , ১৯৭৪ কি ১৯৭৫ এ সে পূজার শুরু , আর যাদের চেষ্টায়, আমি ছিলাম তাদের একজন।
আমি আসার আগেও এ শহরে সরস্বতী পুজো কিন্তু হত , তবে বারোয়ারি অনুষ্ঠান নয় , কারো না কারোর বাড়িতে আয়োজিত পুজো।